একজন আল্লাহর অলি খ্রিস্টান হওয়ার গল্প । (পার্ঠ-৬)
এইটি হচ্ছে আল্লাহর অলি খ্রিস্টান হওয়ার গল্প এর তৃতীয় পার্ব, আপনি যদি আগের পর্বগুলি না পরে থাকেন অর্থাৎ ১, ২, ৩, ৪, ও ৫ নং পর্ব যদি না পরে থাকেন তাহলে এই পোস্টের একেবারে নিচে সবগুলি পর্বের লিঙ্ক দেওয়া আছে আপনি চাইলে আগের পর্বগুলি পরে আসতে পারেন।
( গল্পের পার্ঠ-৬ )
হে প্রিয়তম! বলুন তো, আমি আমার জীবন-যৌবন, দেহ-মন মান সম্ভম সবই কি আপনার চরণতলে সঁপে দেইনি? আপনার নির্দেশে আমি অগ্নি সাগরেও ঝাঁপ দিতে রাজি। তারপরেও কেন আপনি আমাকে ফেলে চলে এলেন?
প্রেমাস্পদ আমার! আমি একজন অবলা, অসহায় নারী। এমন কে আছে, যে আপনার সন্ধানে আমাকে নিয়ে ঘুরে ফিরবে দেশ থেকে দেশান্তরে? আপনি চলে আসার পর আমার দুঃখের রজনী কেবল দীর্ঘই হতে থাকে। ভুলে যাই খাওয়া পরার কথা। ভুলে যাই বিছানায় পিঠ। লাগিয়ে দ্রিা যাওয়ার কথা। রাত-দিন আমার কাছে বরাবর হয়ে গেল।
ফলে শেষ পর্যন্ত আমার অস্থির উপর চর্মের আবরণী ছাড়া আর কিছুই। অবশিষ্ট থাকল না। প্রিয়তম! আপনার সাথে সাক্ষাতের সম্ভাব্য কোনো পথ তখন আমার । সামনে খােলা ছিল না। কিন্তু মন তবুও বলছিল তোমার স্বপ্ন একদিন। বাস্তবায়িত হবে। সুহাসিনী ভােরের আলো অবশ্যই দেখতে পাবে। অবচেতন মনের কুঠুরিতে কুদরতের সেই হাতছানীর ইঙ্গিত আমি পেয়েছি।
প্রিয়! গত রাতে আমার অবস্থা কেন জানি আরও শোচনীয় হয়ে পড়লো। অসহ্য যন্ত্রনায় ছটফট করতে লাগলাম। অবশেষে প্রভু সকাশে কাকুতি-মিনতি করে বললাম- হে দয়ার সাগর! হে পরম করুণাময়! আমি অসহায় দুর্বল এক নারী। আমি অবলা। আমি শক্তিহীন। প্রিয়তমের বিরহ যন্ত্রণা যে আমি আর সইতে পারছি না।
হে বিভু! যার কাছে সমর্পণ করেছি আমার হৃদয়-মন; যার চরণে নিবেদন করেছি জীবন-যৌবন, ধন-মান-সর্বস্ব। মৃত্যুর পূর্বে একবার হলেও যেন তার সাক্ষাত আমার নসিব হয়।
প্রার্থনা শেষে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ি টের পাইনি। হঠাৎ স্বপ্নে দেখি, সর্বময় মানবীয় গুণের অধিকারী এক দ্রলোক আমার সামনে দন্ডায়মান। তিনি আমাকে বললেন- শায়েখ স্পেনিশের প্রতি তোমার ভালবাসা অকৃত্রিম, তার প্রেমে তুমি পাগলপারা ঠিকই, কিন্তু তার স্নেহ-পরশ, প্রেম-প্রীতি তথা সান্নিধ্য পেতে হলে তোমাকে ইসলাম ধর্ম কবুল করতে
সবে। তোমার প্রেমে পড়ে শায়েখ যেমন শান্তির ধর্ম ইসলাম ত্যাগ। ভেবেছিলেন, ঠিক তেমনি তোমাকেও পৌত্তলিকতার বিশ্বাস ছাড়তে হবে। চড়তে হবে ত্রিত্ববাদের ভ্রান্ত মতবাদ। তবেই তোমার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হওয়া সম্ভব। আমি লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম, ইসলাম কাকে বলে? লোকটি জবাবে বললেন-ইসলাম হলো এ কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করা যে, উপাসনার উপযুক্ত একমাত্র আল্লাহ। তিনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য। নেই এবং হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রাসূল।
আমি বললাম, আপনার সব কথা আমি মানতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু তার পদ সেবায় কোনো দিন কি পৌঁছা সম্ভব? জানি না তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন? বড় কথা হলো কে-ই বা আমাকে সেথায় পৌঁছে। দিবে?
মহানুভব লোকটি বললেন- কিছুক্ষণের জন্য তোমার চক্ষু বন্ধ কর । এবং তোমার হাত আমার হাতে রাখ। আমি মনে মনে তাকে ধন্যবাদ দিয়ে তার নির্দেশ পালন করলাম। তিনি আমাকে নিয়ে কয়েক কদম হাঁটলেন। তারপর বললেন চোখ খােল।
আমি চোখ খুলে অবাক হলাম। ধারণা করলাম এটা বাগদাদ শহর হবে। কারণ বাগদাদ সম্পর্কে পূর্বে যা শুনেছি, সেই দৃশ্যই তখন আমার চোখের সামনে ভাসছিল। ইতোমধ্যে হৃদয়বান লোকটি আপনার খানকা শরীফের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন, এটাই শায়েখ স্পেনিশের হুজরাখানা। ওখানে গিয়ে মনের কথা ব্যক্ত কর। আর আমার ব্যপারে বলবে যে, আপনার বন্ধু খিজির আপনাকে সালাম পাঠিয়েছেন।
প্রিয়তম! এ দাসী আপনারই। সে আপনার চরণতলে জীবন উৎসর্গ করে ধন্য হতে চায়। ত্রিত্ববাদের ভ্রান্ত মতবাদ ত্যাগ করেছি। আশ্রয় নিতে এসেছি ইসলামের সুশীতল ছায়ায়। এসেছি আমার প্রাণধিক প্রিয়ের সেবা। করে নির্ভেজাল প্রেমের পরিচয় দিতে। সুতরাং অনুগ্রহ পূর্বক অবিলম্বে আমাকে মুসলমান বানিয়ে আপনার চরণসেবা করার সুযোগ দিন
গল্পের প্রথম পার্ঠ পড়তে এখানে ক্লিক করুন অর্থাৎ (পার্ঠ-১)
গল্পের দ্বিতীয় পার্ঠ পড়তে এখানে ক্লিক করুন অর্থাৎ (পার্ঠ-২)
গল্পের তৃতীয় পার্ঠ পড়তে এখানে ক্লিক করুন অর্থাৎ (পার্ঠ-৩)
গল্পের চতুর্থ পার্ঠ পড়তে এখানে ক্লিক করুন অর্থাৎ (পার্ঠ-৪)
গল্পের পঞ্চম পার্ঠ পড়তে এখানে ক্লিক করুন অর্থাৎ (পার্ঠ-৫)
গল্পের ষষ্ঠ পার্ঠ পড়তে এখানে ক্লিক করুন অর্থাৎ (পার্ঠ-৬)
গল্পের সপ্তম পার্ঠ পড়তে এখানে ক্লিক করুন অর্থাৎ (পার্ঠ-৭)
গল্পের অষ্টম পার্ঠ পড়তে এখানে ক্লিক করুন অর্থাৎ (পার্ঠ-৮)
আপনি যদি যেই কোন রিলেটেড ওয়েবসাইট বানাতে চান তাহলে এখানে ক্লিক করুন।